অ্যাভোক্যাডোর স্বাস্থ্য উপকারিতা

অ্যাভোক্যাডোর স্বাস্থ্য উপকারিতা, অ্যাভোকাডো পুষ্টিগুণ, অ্যাভোকাডো খাওয়ার নিয়ম, অ্যাভোকাডো ফলের ছবি

অ্যাভোক্যাডো। এতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, প্রোটিন, বিভিন্ন উপকারী ফাইটোকেমিক্যাল যেমন, বেটা সাইটোস্টেরল রয়েছে। যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ভাইরাস, রোগের হাত থেকে বাঁচায়। বহুমুখী গুণের অধিকারী অ্যাভোকাডো একমাত্র ফল যাতে প্রচুর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এছাড়াও এতে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট লাইকোপেন এবং বিটা ক্যারোটিন থাকে। অ্যাভোক্যাডো ফলের মূল অংশ কার্বোহাইড্রেট দ্বারা গঠিত, তবে এটি প্রচুর স্বাস্থ্যকর ফ্যাট দ্বারাও পরিপূর্ণ থাকে। তবে অ্যাভোক্যাডোতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ বেশি।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই) অনুসারে, এগুলি হল একটি অ্যাভোকাডোর প্রায় অর্ধেক বা  ৬৮ গ্রাম এর পুষ্টির তথ্য: 

ক্যালোরি: ১১৪

খাদ্যতালিকাগত ফাইবার: ৬ গ্রাম

মোট চিনি: ০.২ গ্রাম

পটাসিয়াম: ৩৪৫ মিলিগ্রাম (মিলিগ্রাম)

সোডিয়াম: ৫.৫ মিলিগ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম: ১৯.৫মিলিগ্রাম

ভিটামিন এ: ৪৩ মাইক্রোগ্রাম (μg)

ভিটামিন ই: ১.৩ মিলিগ্রাম

ভিটামিন কে: ১৪ μg

ভিটামিন বি-৬: ০.২ মিলিগ্রাম

মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড: ৬.৭ গ্রাম


অ্যাভোকাডোর প্রমাণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা:

অ্যাভোক্যাডোর স্বাস্থ্য উপকারিতা, অ্যাভোকাডো পুষ্টিগুণ, অ্যাভোকাডো খাওয়ার নিয়ম, অ্যাভোকাডো ফলের ছবি

দৃষ্টিশক্তির জন্য উপকারি:

চোখের জন্য অ্যাভোক্যাডো খুবই উপকারী। চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি ফাইটোকেমিক্যাল লুটেইন ও জেনান্থিন থাকে। এই দুটি উপাদান চোখে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কাজ করে যা চোখের ক্ষতি কমাতে পারে এবং আমাদের বয়সজনিত চোখের সমস্যা থেকে চোখকে রক্ষা করে।


ক্যান্সার প্রতিরোধে:

ক্যান্সার চিকিৎসা এবং প্রতিরোধে অ্যাভোক্যাডো যথেষ্ট উপকারী। মুখ, ত্বক ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় অ্যাভোকাডো। টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, এটি মানব লিম্ফোসাইটে কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদানের মিশ্র ক্রিয়ার জন্য এবং অ্যাভোকাডোর ফাইটোকেমিক্যাল ক্যান্সার কোষ উৎপন্ন হওয়া বন্ধ করে এবং মেরে ফেলে।


হার্টকে সুস্থ রাখে:

রক্তচাপ কমাতে, ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে এবং ধমনী ফলকের ধীর বিকাশ ঘটাতে অ্যাভোক্যাডো খুবি উপকারী। প্রতি আউন্স অ্যাভোকাডোতে ২৫ মিলিগ্রাম বিটা সাইটোস্টেরল থাকে। নিয়মিত বিটা সাইটোস্টেরল ও অন্য উদ্ভিজ স্টেরল গ্রহণ করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে থাকে।

অ্যাভোক্যাডোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি৬ এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে। যা আমাদের হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এই ফল খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে যায়।


পুদিনা পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা


ওজন কমায়:

সমীক্ষায় দেখা গেছে, খাবারের সঙ্গে অ্যাভোকাডো খেলে ২৩% বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায়। যারা এই ফলটি খান না তাদের তুলনায় পরবর্তী ৫ ঘন্টায় তাদের খাওয়ার ইচ্ছা ২৮% কম হয়। এই ফলটি নিয়মিত ব্যায়াম, সুস্থ খাদ্য সঙ্গে ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। যারা রোজ অ্যাভোকাডো খান, তাঁদের বিএমআই (BMI) রেট কম হওয়ায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির সমস্যা দেখা যায় না।

অ্যাভোকাডো এমন একটি ফল যা দেহে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। সুতরাং আপনার ডায়েট চার্টে অ্যাভোকাডো যোগ করলে এটি স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে কম ক্যালোরি খেতে সহায়তা করবে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত করবে।


হাড় মজবুত করে: 

কাঁচা অ্যাভোকাডোতে বোরন-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান থাকে যা ক্যালশিয়াম শোষণকে বাড়িয়ে তুলে হাড় মজবুত করে। এতে থাকা ভিটামিন-কে ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানগুলি মজবুত হাড় গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং অস্টিওপ্রোটেক্টিভ প্রভাব ফেলে।

অ্যাভোক্যাডোতে থাকা বেশিরভাগ ফ্যাট হলো অলিক অ্যাসিড -একটি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড যা হার্ট এর জন্য উপকারী।


লিভারের যত্নে অ্যাভোকাডো:

গবেষণায় দেখা যায় এই ফলটি লিভাল সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা থেকে রক্ষা করে এবং এটি শক্তিশালী করে তোলে।লিভার আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অ্যাভোকাডো লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। এতে কিছু জৈব রয়েছে যা লিভারকে সুস্থ এবং শক্তিশালী হতে সহায়তা করে। হেপাটাইটিস বি হলে সাধারণত লিভার দুর্বল হয়ে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। গবেষণায় দেখা যায় এই ফলটি লিভাল সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা থেকে রক্ষা করে এবং এটি শক্তিশালী করে তোলে।


অন্যান্য:

  • অন্ত্রের ফাংশনকে স্বাভাবিক রাখে এবং খাবার সহজেই হজম করাতে সহায়তা করে।
  • রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • দাঁতের ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং মুখের বাজে গন্ধ প্রতিরোধ করে।
  • কিডনির কার্যকারিতা বজায় রাখে
  • স্মৃতিশক্তির পাশাপাশি মানসিক কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
  • সোরিয়াসিস রোগের উপসর্গ উপশম ও নির্মূল করে
  • চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।
  • শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।


সূত্রঃ webmdncbihealthline



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ