মধুর উপাদান
মধুতে রয়েছে
উচ্চমাত্রার পুষ্টিমান, যা মানবদেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালরি।
মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান
বিদ্যমান। ফুলের পরাগের মধুতে ২৫
থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং
৫ থেকে ১২ শতাংশমন্টোজ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো
অ্যাসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ
লবণ এবং ১১ শতাংশএনকাইম।
এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই।
এতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক
এনজাইম ২ শতাংশ এবং মানবদেহের কোষকলা, অঙ্গ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপাদান থাকে।
এ এনজাইমগুলো হচ্ছেÑ ডায়াস্টেজ, ইনভার্টেজ, সেকারোজ, ক্যাটালেক্স, পার-অক্সিডেজ, লাইপেজ।
এনজাইমগুলো বিভিন্ন কালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্লোরিন, সালফার,
ফসফরাস, আয়োডিন লবণের সাথে যুক্ত থাকে।
মধুর
উপকারিতা
মধু
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায়
এবং শরীরের ভেতরে এবং বাইরে যেকোনো
ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতাও জোগান
দেয়। সাধারানত প্রাকিতিক মধুতে
আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা
করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
মধু হজমে
সাহায্য করে :
মধু পেটের অম্লীয়ভাব
কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা
করে। এতে যে শর্করা থাকে, তা সহজেই
হজম হয়। কারণ, এতে যে ডেক্সট্রিন থাকে, তা সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে
ক্রিয়া করে। মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স যা ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
হজমের সমস্যা অনেকাংশে দূর করার জন্য মধু খেতে চাইলে প্রতিবার ভারী খাবারের আগে এক
চামচ মধু খেয়ে নিন।
হাঁপানি
রোধে মধু:
এটি হাঁপানি রোধে সহায়তা
করে। আধা গ্রাম গুঁড়ো করা গোলমরিচের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু এবং আদা মেশান। ভালো ফলাফল
পেতে দিনে অন্তত তিনবার এই মিশ্রণ খান।
হৃদ্রোগে মধু:
মধু রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০% পর্যন্ত কমিয়ে
দেয়। এটা হৃদপেশিকে সবল করে এবং
এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এক
চামচ মৌরি গুঁড়োর সঙ্গে
এক বা দুই চামচ
মধুর মিশ্রণ হৃদ্রোগের টনিক
হিসেবে কাজ করে। মধুর
সাথে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে তা রক্তনালীর
বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এবং
রক্তনালী পরিষ্কার করতে সাহায্য করে
মধু
আয়ু বৃদ্ধি করে:
নিয়মিত যারা মধু ও সুষম খাবারে
অভ্যস্ত তুলনামূলক ভাবে সেসব ব্যাক্তিরা বেশি কর্মক্ষম ও নিরোগ হয়ে বেঁচে থাকে।
শক্তি
প্রদায়ী:
মধু দেহে তাপ
ও শক্তি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে। মধু ভালো শক্তি
প্রদায়ী খাদ্য। তাপ ও শক্তির
ভালো উৎস। মধুতে আছে
প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি। এই প্রাকৃতিক চিনি
আপনার শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম
রাখতে সাহায্য করে।
ফুসফুসের
যাবতীয় রোগ:
বলা হয়,
ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু উপকারী।
অনেকের মতে,
এক বছরের পুরোনো মধু শ্বাসকষ্টের রোগীদের
জন্য বেশ ভালো।
কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর করে:
মধুতে রয়েছে
ভিটামিন বি–কমপ্লেক্স। এটি
ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
করে। ১ চা–চামচ
খাঁটি মধু ভোরবেলা পান
করলে কোষ্ঠবদ্ধতা এবং অম্লত্ব দূর
হয়। এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে
এক চামচ লেবু ও এক চামচ আদার রস এবং দু’চামচ মধু মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রশমিত
হয়।
রক্তশূন্যতায় মধু:
মধু রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে
বলে। তাই এটি রক্তশূন্যতায় বেশ
ফলদায়ক। কারণ, এতে থাকে খুব
বেশি পরিমাণে কপার, লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ।
অনিদ্রায় মধু:
মধু অনিদ্রার ভালো ওষুধ। রাতে
শোয়ার আগে এক গ্লাস
পানির সঙ্গে দুই চা–চামচ
মধু মিশিয়ে খেলে এটি গভীর
ঘুম ও সম্মোহনের কাজ
করে।
যৌন
দুর্বলতায় মধু:
পুরুষদের মধ্যে যাঁদের যৌন দুর্বলতা রয়েছে,
তাঁরা যদি প্রতিদিন মধু
ও ছোলা মিশিয়ে খান,
তাহলে বেশ উপকার পাবেন।
নিয়মিত মধু সেবন করলে ধাতু দুর্বল (ধ্বজভঙ্গ) রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবে মধু :
ঋতুস্রাব
অনিয়মিত হতে থাকলে ছোট
চামচে এক চামচ তুলসীর
রস সমপরিমাণে মধু ও এক
চিমটি বা একাটি গোলমরিচের
গুঁড়ো এক সঙ্গে মিশিয়ে
দিনে দুবার করে দুমাস নিয়মিত
সেবন করলে উপকার পাওয়া
যায়।
মুখগহ্বরের
স্বাস্থ্য রক্ষায়মধু :
মধু রক্তনালিকে সম্প্রসারিত
করে দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করে। মুখগহ্বরের
স্বাস্থ্য রক্ষায় মধু ব্যবহৃত হয়।
এটা দাঁতের ওপর ব্যবহার করলে
দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। দাঁতে পাথর
জমাট বাঁধা রোধ করে এবং
দাঁত পড়ে যাওয়াকে বিলম্বিত
করে। মধু মিশ্রিত পানি
দিয়ে গড়গড়া করলে মাড়ির প্রদাহ
দূর হয়।
তাপ
উৎপাদনে মধূ:
শীতের ঠান্ডায় মধু শরীরকে গরম
রাখেতে সহায়তা করে। এক অথবা দুই
চা–চামচ মধু এক
কাপ ফুটানো পানির সঙ্গে খেলে শরীর ঝরঝরে
ও তাজা হয়।
মধু উচ্চ
রক্তচাপ কমায়:
দুই চামচ মধুর
সঙ্গে এক চামচ রসুনের
রস মেশান। সকাল–সন্ধ্যা দুইবার
এই মিশ্রণ খান। এটা প্রতিনিয়ত খেলে
উচ্চ রক্তচাপ কমায়। প্রতিদিন সকালে খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে
খাওয়া উচিত।
এছাড়াও মধু:
দৃষ্টিশক্তি
ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে
বাতের ব্যথা
উপশম করে
দাঁতকে পরিষ্কার
ও শক্তিশালী করে
মাথা ব্যথা
দূর করে
ক্ষুধা, হজমশক্তি
ও রুচি বৃদ্ধি করে
আন্ত্রিক রোগে
উপকারী
শারীরিক দুর্বলতা
দূর করে
ঠাণ্ডা জনিত
রোগে বিশেষ উপকারী
সূত্রঃ ais.gov.bd; dailyhunt.in; JanarJonno
A good and informative article it is!