কেমন হবে শিশুদের সাথে আপনার আমার ব্যবহার

 

একটি শিশুর কাছে বাবা রিয়েল হিরো মা সবচেয়ে ভরসার জায়গা। শিশুটির বিশ্বাস তার বাবা মা কখনো ভুল করে না। তারা যা বলেন করেন এবং ভাবেন সব সঠিক। শুভ্র সুন্দর হয় শিশুদের মন আর খুব স্বাভাবিক ভাবে শিশুরা খুব অনুকরণ প্রিয় হয়ে থাকে সেই সাথে প্রিয়জনের কাছ থেকে শেখা বিষয়গুলো তারা মনেও রাখে বেশি। একটি শিশুকে পূর্ণভাবে গড়ে তোলার জন্য মা-বাবার ভূমিকাই প্রধান। তার হাঁটাচলা থেকে শুরু করে কথা বলা,নিয়মানুবর্তিতা, পড়াশুনা, ঘরের টুকিটাকি কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের উৎসাহ তাকে অনুপ্রেরণা জোগায়। শিশুর সঙ্গে আপনি কেমন ব্যবহার করবেন? মনে রাখবেন আপনার আচরণের ওপর নির্ভর করে আপনার সন্তানের ভবিষ্যত। কখনো কখনো দায়িত্বশীল মা বাবাও ব্যাপারে ভুল করে থাকে।তাদের ভুলের জন্য নষ্ট হতে পারে তাদের সন্তানের জীবন।

         "ছোট্ট ওরা চপল শিশু

          ভোরের প্রতিচ্ছবি

          সবুজ মনের অবুঝ শিশু

          অই আকাশের রবি"

'গড়তে শিশুর ভবিষ্যৎ স্কুল হবে নিরাপদ'এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হওয়া বিশ্ব শিশু দিবস শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০১৮ এর দ্বিতীয় দিনে সোমবার অক্টোবর বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শিশুদের নিয়ে সেশন।

        "আমার কথা শোনো"

প্রধান অতিথি মহিলা শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মাহমুদা শারমিন বলেন, শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে মা-বাবা এবং শিক্ষকের ভূমিকা অনেক শিশুদের সামনে ধূমপান মাদক দ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।পাশাপাশি টিভিতে শিশুদের নিয়ে সিরিয়াল না দেখে তাদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে সাহায্য করে এমন অনুষ্ঠান দেখা উচিত।

 

#শিশুর সুন্দর আচার-আচরণ গঠনের মূল ভূমিকা পালন করে পরিবার। আর এই ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের 'শিশু বিকাশ সামাজিক সম্পর্ক'বিভাগের সহকারি অধ্যাপক রুমানা বাসর।

তিনি বলেন, 'শিশুকে সুন্দর আচরণ শেখাতে হলে তার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করতে হবে' পরিবার থেকেই শেখাতে হবে বড়দের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হয় আর ছোটদের কিভাবে ভালবাসতে হয়।তাছাড়া শিশুরা একটু বড় হলেই বাইরের অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে মেলামেশা করে। ফলে তাদের আচার আচরণে পরিবর্তন আসতে পারে যদি বুঝতে পারেন শিশু খারাপ কিছু শিখছে তাহলে তাকে শোধরানোর চেষ্টা করতে হবে।

 

#প্রথমেই, শিশুকে বাধ্য হয়ে চলার শিক্ষা দিতে হবে।

#বড়দের শ্রদ্ধা ছোটদের ভালোবাসার শিক্ষা দিতে হবে। এসব বিষয় সম্পর্কে উপদেশের মতো শিক্ষা না দিয়ে বাস্তবে করে দেখাতে হবে।

যেমন-আপনি নিজে বড়দের প্রতি বাধ্যও শ্রদ্ধা প্রকাশ করে এবং ছোটদেরকে ভালোবেসে আপনার সন্তানের কাছে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরুন। এতে শিশু তা খুব সহজেই গ্রহণ করবে।

#শিশুর সঙ্গে সব সময় সত্য কথা বলুন তাকে সত্য বলতে উৎসহিত করুন।কোন ভুল করে যদি সে স্বীকার করে তাহলে কড়া শাসন না করে বুঝিয়ে বলুন ভবিষ্যতে যেন এমন কাজ না করে সে বিষয়ে সাবধান করে দিন।

#শিশুরা কোন ভুল করলে তাদেরকে প্রথমে বোঝাতে হবে। ওই জন্য পরে বকা দিতে পারেন। তবে বকা দেওয়ার সময় শিশুকে কোন রকমের আজেবাজে বা অপমানজনক শব্দ ব্যবহার করা ঠিক নয়।

#শিশুর সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করুন তাহলে সে আপনার কাছ থেকে কোনো কিছু লুকাবে না। এবং সকল কথাই সে সাদরে গ্রহণ করবে।

#বাসায় অতিথি এলে শিশুকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে সময় কাটাতে উৎসাহিত করুন। এতে ছোট থেকেই তার মধ্যে সামাজিকতার বোধ জেগে উঠবে।

#দিনের নির্দিষ্ট একটি সময় বেছে নিন কেবল শিশুর জন্য। এই সময় অন্য কোন কাজ না করে তার সঙ্গে সময় কাটান। তার সঙ্গে গল্প করুন, আনন্দ করুন, মোটকথা সম্পূর্ণ মনোযোগ তার দিকে দিন।ফলে সে বুঝবে আপনার কাছে তার গুরুত্ব আছে। তখন সে আপনার প্রতিটি কথা মানসিক অবস্থার গুরুত্ব দেবে। শিশুকে মানুষের মত মানুষ করে তুলতে তার সুন্দর ব্যবহার সৎ চরিত্র বিকাশে সহায়তা করা উচিত। এতে শিশু বর্তমান ভবিষ্যৎ সময়ে বিপথগামী হবে না। তাই শিশুর সঠিক বিকাশে ছোট থেকেই সহায়তা করা উচিত বলে মনে করেন, এই অধ্যাপক

 

#শিশুকে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন করুন:

আপনি নিজের ব্যক্তিত্ব দিয়ে আপনার শিশুর মধ্যে ব্যক্তিত্ব আনুন। মুখ গোমরা করে রাখা, অন্যর সঙ্গে ঝগড়া করা, অন্যের ব্যাপারে নাক গলানো প্রভূতি বাজে অভ্যাস থেকে তাকে বিরত রাখুন। সে কোন কাজে ভুল করলে তা ধরিয়ে দিয়ে কিভাবে সংশোধন করতে পারে তা শেখান। সমবয়সীদের সঙ্গে 'হ্যালো'বলে শুভেচ্ছা বিনিময়, বয়স্কদের সঙ্গে সালাম দেয়া, ভুল করলে 'দুঃখিত' বলে দুঃখ প্রকাশ করা প্রভূতি আদব-কায়দা তাকে শিখিয়ে দিন। পোশাকের পরিচ্ছন্নতার সম্পর্কে তাকে সচেতন করুন। তার সোয়া, উঠা-বসা কেমন হবে তাকে তা শেখান।

#শিশুকে সহনশীল হতে সেখান:

আপনার স্কুল পড়ুয়া ছেলে আপনাকে এসে বলল, তার বন্ধু তাকে মেরেছে, আপনি সে ক্ষেত্রে বলতে পারেন। তুমি নিশ্চয়ই এমন কিছু করেছ যা তাকে প্ররোচিত করে তুলেছিল তোমাকে মারতে। আপনার শিশুকে আপনি সহনশীল হতে শেখান। সে যদি কারও সঙ্গে অসদাচরণ করে তাকে তা বোঝান। তাকে সব সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে বলুন।তার কাছ থেকে যেন অন্যরা শিখতে পারে সে ব্যাপারে তাকে জ্ঞান দিন। আপনার সমর্থন আপনার সন্তানদের শান্ত রাখবে। যখন তারা জানবে আপনি তাদের পাশে আছেন, তারা চমৎকার অনুভূতি অনুভব করবে।

আগের দিনের একটি কথা প্রায়ই শোনা যেত," বাবা ভালো যার ছেলে ভালো তার, মা ভালো তার ঝি , গাই ভালো যার দুধ ভালো তার দুধ ভালো তার ঘি,

বাবা মা যেমন হবে সন্তান ঠিক তেমনি হবে প্রোডাকশন অফ হাউস।আসুন না ভালো কিছু অভ্যাস এর মাধ্যমে নিজেকে একটু পরিবর্তন করে সন্তানদের কাছে তাদের আইডল হিসেবে পরিচিত হই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. সাধুবাদ আর দুআ রইলো নিরন্তর এগিয়ে যাওয়ার ইসরাত(আপু)। খুব ভালো ব্রীফ করেছো বিষয় টি।(দারুন)

    উত্তরমুছুন